শিরোনাম
Passenger Voice | ০২:০১ পিএম, ২০২৪-০৪-০৩
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শত কোটি টাকার সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার প্লান্ট (কেন্দ্রীয় শীতাতপ প্লান্ট) নষ্ট হয়ে আছে দুই মাস ধরে। ওই প্লান্টের চারটি সিলার নষ্ট হয়ে গেছে। প্লান্টে দূষিত পানি ব্যবহার, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও দীর্ঘদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না করার কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এভাবে এসি নষ্ট হওয়ার ঘটনাকে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা বলছেন তারা।
সম্প্রতি দায়িত্বশীল এক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বিমানবন্দরে সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনে আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহারের খবর সামনে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করায় বিমানবন্দরের সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে বিমানবন্দরের যাত্রী সাধারণকে তীব্র গরমে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে জরুরিভিত্তিতে আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ঢাকা থেকে এয়ার ফ্লোর স্ট্যান্ডিং এসি এবং স্পিড টাইপ প্রায় ১০০টি এসি এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি সামাল দিতে আরও ৩০ টি এসি লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বিমানবন্দরে শীতাতপ ব্যবস্থা সচল রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিমানবন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
জানা গেছে, প্রায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে টার্মিনাল ভবনের চারটি সিলারের (ঠান্ডা বাতাস পরিবাহী পাইপ) মধ্যে চারটিই অকেজো হয়ে যায়। এ অবস্থায় আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ঢাকা থেকে ফ্লোর স্ট্যান্ডিং এসি এবং স্পিড টাইপ এসি এনে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ চালানো হচ্ছে। তাতেও সব জায়গা ঠান্ডা রাখা যাচ্ছে না। টার্মিনাল ভবন গরম হয়ে যাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
সূত্র জানায়, এসব ত্রুটি সারাতে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একরিঞ্জ লিমিটেড মালিক রেজাউল করিম জানান, বিমানবন্দরের সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার প্লান্টের ত্রুটি সারাতে ভারত থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হয়েছে। ভারত থেকে আসা বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী আরিফ এ নিয়ে কাজ করছেন। তিনি উল্লিখিত ত্রুটি পরীক্ষা করে দেখেছেন। সিলারগুলো আর ঠিক করার অবস্থায় নেই।
একরিঞ্জ লিমিটেডের মালিক রেজাউল করিম জানান, নষ্ট হয়ে যাওয়া চারটি সিলারের দাম ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা। গোটা সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার প্লান্টের দাম তো শত কোটি টাকা।
সিভিল এভিয়েশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আরিফ বলেন, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার প্লান্টের চারটি সিলারের ত্রুটি সারাতে একাধিক বিশেষজ্ঞ কাজ করছে। বিষয়টি আমাদের সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান মেম্বারসহ সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন। আশা করছি এটা মেরামত করতে পারব। মেরামত করতে না পারলে মালামাল আমদানি করে টেন্ডার আহ্বান করে এই প্লান্ট বসানো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা আবার যাব, সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন প্লান্টের ত্রুটি সারাবো এবং যেকোনো প্রকারেই আমাদের বিমানবন্দর সচল রাখবো।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না করার কারণে এসির সিলারে ময়লা পানি ঢুকে যায়। এতে এসির প্লান্ট নষ্ট হয়ে যায়। দায়িত্বশীল একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও জানা যায় বিমান বন্দরে সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনে আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করায় বিমানবন্দরের সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার নষ্ট হয়ে যায়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সিভিল শাখার সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল আলীমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের ইলেট্রিক্যাল ম্যান্টেনেজ (ইএম) শাখার সহকারী প্রকৌশলী মো. সানা উল্যা বলেন, বিমানবন্দরের সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার প্লান্টের চারটি সিলারের ত্রুটি সারাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসনিম আহমেদকে একাধিকবার কল দিলেও সাড়া মেলেনি। হোয়াটসঅ্যাপে মন্তব্য চেয়ে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2024 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.